
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি:
খাগড়াছড়িতে বিএনপি, আওয়ামীলীগ ও পুলিশের মধ্যে ত্রিমূখি সংঘর্ষে সাংবাদিক সহ ৩৩জন আহত হয়েছে। গতকাল (সোমবার) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে জেলা শহরের শাপলা চত্বর, ভাংগাব্রিজ, পেঙ্গুইন মোড় এলাকায় থেমে থেমে প্রায় ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষ হয়, বিস্ফোরিত হয় একাধিক ককটেল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে পুলিশ ৪৭ রাউন্ড শট গানের গুলি নিক্ষেপ করে। শহরে মোতায়েন করা হয় ১ প্লাটুন বিজিবি। আটক করা হয়েছে-১ বিএনপি কর্মীকে। ভাংচুর হয় সাংবাদিকের মোটর সাইকেল সহ ৩টি মোটর সাইকেল ও জেলা বিএনপি’র কার্যালয়। ঘটনার প্রতিবাদে খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপি আজ (মঙ্গলবার) খাগড়াছড়ি পুরো জেলায় সকাল সন্ধ্যা সড়ক ও নৌ পথ অবরোধের ডাক দিয়েছে । এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
আহতরা হলেন- ফোকাস বাংলার খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি শংকর চৌধুরী, পৌর মৎস্যজীবিলীগের ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক রুবেল দাশ (২৬), যুবলীগ কর্মী আবু বক্কর সিদ্দিক, ছাত্রলীগের মো. রেজাউল, মো. রোকন, মো. কুকিল ও শ্রমিকলীগের মাজাহরুল ইসলাম। আওয়ামীলীগের আহতরা জানান, তারা পুলিশের টিয়ারশেলে আহত হয়ে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ৫জানুয়ারী গণতন্ত্র হত্যা দিবস উপলক্ষে সকালে ভাঙ্গাব্রীজ এলাকা হতে বিএনপি কালো পতাকা মিছিল বের করে আদালত সড়কস্থ কৃষি ব্যাংকের সামনে পৌঁছলে পুলিশ বাঁধা দেয়। এসময় পূর্ব ঘোষিত শাপলা চত্বরে অবস্থানরত ছাত্রলীগ ও আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে ধাওয়া দিলে সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষে উভয়ের নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা, ইটপাটকেল ও ককটেল হামলা চালায়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের জন্য শর্ট গানের গুলি ছুড়লে উভয় পক্ষ ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। পরে আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ফেরার পথে জেলা বিএনপি কার্যালয়ে হামলা চালায়। এসময় জেলা বিএনপি কার্যালয়ে ফটকে থালাবদ্ধ থাকায় বিক্ষুব্ধরা কার্যালয় সম্মুখে পুলিশ বসার জন্য রাখা অসংখ্য চেয়ার ও ২টি মোটর সাইকেল ভাংচুর করে। ভাংচুর হয় বাংলাদেশ টুডে খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি মুহাম্মদ সাজুর মোটর সাইকেল। জেলা বিএনপি ফটকে থাকা পেস্টুনে আগুন ধরিয়ে দেয় আওয়ামীলীগের বিক্ষুব্ধ কর্মীরা। পরে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস পৌঁছে। ইটপাটকেলে ভাংচুর হয় হোটেল ভাতঘর। প্রায় ঘন্টাব্যাপী চলা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের কারনে আদালত সড়ক রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। মুহুর্তেই শহরে গাড়ী চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এদিকে, খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির দাবী করেছে, আওয়ামীলীগের হামলা ও পুলিশের টিয়ারশেলে জেলা বিএনপি’র প্রচার সম্পাদক খনি রঞ্জন ত্রিপুরা সহ ৩৫জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এ ঘটনায় আজ (মঙ্গলবার) খাগড়াছড়ি পুরো জেলায় সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানান।
অপরদিকে, খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক এস এম শফি দাবী করেছেন, বিএনপি‘র হামলায় আওয়ামীলীগের অন্তত ১২জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে শহরে ১ প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার শেখ মো: মিজানুর রহমান জানান, পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ৪৭ রাউন্ড শট গানের গুলি ছুড়েছে, একজনকে আটক করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে।
পাঠকের মতামত